অজেয় আফগানদের ভবিষ্যৎ
জসীম উদ্দিন খান:
আফগানিস্থানকে দখলদার সম্রাটদের গোরস্থান হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়। সিল্ক রোডের সাথে সংযুক্ত হওয়ায় বিগত ২০০০ বছরে আফগানদের আলেকজান্ডার দি গ্রেট থেকে শুরু করে মৌরিস, মুসলিম আরব, মোগল, বৃট্রিশ, সোভিয়েত ও আমেরিকান আধুনিক বাহিনী দখল করে নেয়। কিন্তু আফগানরা কোন দখলদারকেই মেনে নেয় নাই সেই প্রাচীন কাল থেকেই।
সমতল পাহাড়ে মিশ্রিত, সাগর পথ বিহীন বিরুপ আবহাওয়ায় লড়াই করে টিকে থাকায় অভ্যস্থ আফগানরা বছরের পর বছর নিজ মাতৃভুমিকে রক্ষার জন্য লড়াই করেছে এবং বিজয়ী হয়েছে। মিশরের মতো আফগানিস্থানকেও মানব সভ্যতার শুরুর দিককার একটি সভ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। চেঙ্গিসখান কাবুল দখল করলে এর সকল সভ্যতার চিহ্ন গুড়িয়ে দিলে বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজ ও পশুপালন পেশায় জড়িয়ে পড়ে।
ইসলাম প্রসারের শুরুর দিকেই অর্থাৎ ৬২৪ সালের দিকেই আফগানিস্থানে ইসলাম প্রচার শুরু হয়। এর আগে আফগানদের বেশিরভাগই ছিল বৌদ্ধ ধর্মালম্বী। জোরোস্টিন, ইহুদী, সুরিয়া, সাফরিদ ও নান ধর্মালম্বী মানুষও ছিলো। ১১ শতাব্দিতে গজনির মাহমুদ ক্ষমতায় এলে বেশিরভাগ আফগান জনগোষ্টিকে মুসলিম হিসেবে কনভার্ট করতে সমর্থ হয়।
বাংলাদেশের চেয়ে আকারে প্রায় ৪গুণ বড় আফগানিস্থানে জনসংখ্যা ৪ কোটির কাছাকাছি। আফগানরা অনেক আগে থেকেই বলিউডের ছবি দেখতে পছন্দ করে এবং শাহরুক, সালমান, সাইফ আলী খান সহ অনেক বলিউড তারকার পূর্বপুরুষ আফগানিস্থান এর সাথে সম্পৃক্ত।
বর্তমানে রাশিয়া, চায়না, পাকিস্থান, ভারত, ইরান ও আমেরকিা সহ নানান অক্ষশক্তির স্বার্থ জড়িয়ে আছে আফগানিস্তানে। সেখানে ইতিমধ্যেই তারা বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এসব বিনিয়োগ ও অক্ষশক্তির স্বার্থের কারনে ক্ষমতা দখল করলেও তালেবানরা যে তাদের নিজেদের মতো আফগান পরিচালনা করতে পারবে না এটা নির্দিধায় বলে দেয়া যায়।